Topics

Quizzes

ফাইন্যান্স এর কঠিন বিষয় গুলি বুঝে নেই

Professional Finance

click click click click click





কীভাবে কোম্পানির জন্যে বাজেট তৈরি করা হয়? - Infographics



কীভাবে কোম্পানির জন্যে বাজেট তৈরি করা হয়?

একটা রাষ্ট্র পরিচালনা করতে বাজেটের প্রয়োজন হয়। আয় ও ব্যয়ের মধ্যে ভারসাম্য রেখে উপার্জনের সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে অনেকে ব্যক্তিগত বাজেটও তৈরি করে থাকেন। ঠিক তেমনি একটি কোম্পানি সার্বিকভাবে পরিচালনা করতেও বাজেট নির্ধারণ ও প্রণয়নের প্রয়োজন হয়। ফাইন্যান্সের ভাষায়, বাজেট হলো কোনো কোম্পানির ব্যবসায়িক লক্ষ্য পূরণের একটি নীলনকশা। প্রশ্ন হলো, কীভাবে একটি কোম্পানির বাজেট নির্ধারিত হয়? বাজেট একটি কোম্পানির সার্বিক পরিচালনা সংক্রান্ত পরিকল্পনার একটি অংশ। তাই একটি কোম্পানির জন্য যথোপযুক্ত বাজেট তৈরি করতে গেলে সেই কোম্পানি নিয়ে বিস্তারিত ধারণা থাকা বেশ জরুরি। এখন কীভাবে একটি কোম্পানির বাজেট নির্ধারণ করা হয় সে প্রসঙ্গে আসা যাক। একটি কোম্পানির বাজেট নির্ধারণ করা হয় মূলত দুইটি উপায়ে। একটিকে বলা হয় Top-Down Method; অপরটিকে বলা হয় Bottom-up Method. প্রথমেই আসা যাক Top-Down Method নিয়ে। Top-Down Method এ একদম Top Management Level অর্থাৎ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে বিভিন্ন লক্ষ্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। যেমন মোট আয়, মোট মুনাফা, মোট ব্যয় ইত্যাদি। এরপর সেই লক্ষ্যগুলো অর্জন করার লক্ষ্যে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টকে যথাযথভাবে কাজ ভাগ করে দেওয়া হয়। ভাগ করে নিয়ে যথাযথভাবে বণ্টন করা হয়। Top-Down Method এ বাজেট তৈরি করার ক্ষেত্রে এই প্যারামিটারগুলোকে বিবেচনায় রাখা জরুরি। তাহলে ব্যাপারটা কী দাঁড়ালো, এই নিয়ম অনুযায়ী বাজেটটা থাকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত। এবং তাদের নির্ধারণকৃত বাজেটটাই পুরো কোম্পানিতে যথাযথভাবে বণ্টন করা হয়। অন্যদিকে, বাজেট নির্ধারণের অপর একটি পদ্ধতি হলো Bottom-up Method. এই পদ্ধতিতে বাজেটটা সরাসরি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত হয় না। এই পদ্ধতিতে বাজেট নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া হয় মার্কেটের চাহিদাকে। মার্কেটের চাহিদা সম্পর্কে কয়েক দফা রিপোর্টিং এর মাধ্যমে এই পদ্ধতিতে বাজেট নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। প্রতিটা জিনিসের ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুইটি দিকই রয়েছে। বাজেট নির্ধারণের এই দুইটি প্রক্রিয়ারও সেরকম দুই ধরণের দিকই রয়েছে। প্রথমে আসা যাক Top-Down Method এ। এই পদ্ধতিটা একদম ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে নির্ধারিত হয় বলে অনেক ক্ষেত্রেই ডিপার্টমেন্টভেদে কিছু প্রয়োজন বা চাহিদা বাদ পড়ে যায়। আবার যেহেতু এই ক্ষেত্রে বাজেটটা অনেক কিছু বিশ্লেষণ করে, যাচাই বাছাই করে নির্ধারণ করা হয় তাই এই এক্ষেত্রে বাজেটটা বেশ নিখুঁত হয়। এবার আসা যাক Bottom-up Method নিয়ে। এইক্ষেত্রে বাজেট যেহেতু বিভিন্ন মার্কেটের চাহিদা সম্পর্কে প্রাপ্ত আইডিয়াকে সংকলন করে সেখান তৈরি করা হয় তাই প্রায়সময়ই মার্কেটের চাহিদা সম্পর্কিত প্রকৃত ধারণা পাওয়া নাও যেতে পারে আর তাই এই পদ্ধতিতে বাজেট নির্ধারণ করা হলে পরবর্তী লক্ষ্য নির্ধারণেও ঝামেলা হবার সম্ভাবনা থেকে যায় কখনও কখনও। পদ্ধতি যেটাই হোক না কেন ভালো মন্দ দুটো দিকই থাকবে। কোম্পানির চাহিদা আর প্রয়োজন অনুযায়ী অনুযায়ী ঠিক করা হবে কে কোন পদ্ধতিটাকে বেছে নিয়ে তাদের পরবর্তী বাজেট নির্ধারণ করবেন। Top Down কিংবা Bottom Up পদ্ধতি যাই হোক না কেন, বাজেট না হয় নির্ধারিত হলো। ৫০ শতাংশ কাজের সমাপ্তি। তা বাকি ৫০ শতাংশ কাজটা কী? বাজেট নির্ধারণ করলেই তো আর হবে না কেবল, সেটাকে পর্যবেক্ষণও তো করতে হবে যে এই প্রক্রিয়ায় নির্ধারিত বাজেট ঠিক কতখানি কার্যকরী কোম্পানির জন্যে। নির্ধারিত সময় শেষে যাচাই করতে হবে যে পূর্ব নির্ধারিত বাজেট আর প্রকৃত বাজেটের মধ্যে তারতম্য কতটা। কোথায় কোথায় প্রয়োজনের চাইতে কম-বেশি খরচ হয়েছে আর কোথায় আরো ভালো করে বিনিয়োগ করা যায়, কোথায় খরচের পরিমাণ কমানো দরকার সেটাও যাচাই করতে হবে। আর এই বিষয়গুলো বিশ্লেষণের মাধ্যমেই পরবর্তী নতুন বাজেট নির্ধারণ করা হবে। ছোট করে যদি পুরো ব্যাপারটাকে সারাংশ করা হয় তাহলে একটা কোম্পানির বাজেট নির্ধারণের প্রক্রিয়াটা কেমন হবে সেটা নির্ভর করে মূলত কোম্পানিটা কী কাজ করে, তাদের উদ্দেশ্য কী সেটার ওপরে। কোম্পানির চাহিদা অনুযায়ী বাজেট নির্ধারণের পদ্ধতি যেরকমই হোক না কেন, সেটার সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করতে প্রয়োজন যথাযথ পর্যবেক্ষণ, কেননা পূর্বের বাজেটের কার্যকারিতা আর ফলাফলের ওপর ভিত্তি করেই পরবর্তী বাজেট নির্ধারিত হবে। বাজেট তৈরির ক্ষেত্রে - ১) কোম্পানির সার্বিক পরিচালনা কৌশল সম্পর্কে ধারণা থাকা জরুরি। ২) যদি কোনো কোম্পানি বাজেট তৈরিতে Top Down Method ব্যবহার করে তাহলে সেক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত লক্ষ্যগুলো নিয়ে কাজ করা উচিত। অন্যদিকে বাজেট নির্ধারণের পদ্ধতি যদি Bottom Up Method হয় তাহলে প্রয়োজন অনুযায়ী লক্ষ্যগুলো নিজেদেরকে নির্ধারণ করতে হবে। ৩) পুরো বিষয়ে নিজের কোম্পানির লক্ষ্য সম্পর্কে ধারণা স্পষ্ট থাকা জরুরি। ৪) বাজেট নির্ধারণের ক্ষেত্রে কোম্পানির লক্ষ্যের সংখ্যাগত মানটাও জেনে রাখা জরুরি। ৫) এবং সব শেষে পুরো বাজেটটাকে পুনরায় যাচাই করে বাজেটটি কোম্পানির সার্বিক পরিচালনা কৌশল অনুযায়ী উপযুক্ত কি না সেটা সুনিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন। আর এভাবেই মূলত কোনো কোম্পানির অভ্যন্তরীণ বাজেট নির্ধারিত হয়।