Topics

Quizzes

ফাইন্যান্স এর কঠিন বিষয় গুলি বুঝে নেই

Professional Finance

click click click click click





The Six Jar Method - Infographics



The Six Jar Method

উপার্জন করা পৃথিবীর অন্যতম কঠিন কাজগুলোর একটি। আর হ্যাঁ সেই উপার্জনের অর্থটার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা সুনিশ্চিত করা আরো জটিল। আয় আর ব্যয় নিয়ে আমাদের অনেকের জ্ঞান “আয় বুঝে বুঝে ব্যয় করো” - তেই এখনও সীমাবদ্ধ। কারণ, সময় ব্যবস্থাপনা, শিষ্টাচার, নৈতিকতা, শৃংখলার মতো বিষয়াদির শিক্ষা আমরা স্কুল-কলেজ থেকে পেলেও অর্থ উপার্জন ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা আমাদের নেই। তাই এই আয়টাকে বুঝে শুনে ব্যয় করতে গিয়েই আমাদের ঝামেলায় পড়তে হয়। প্রশ্ন হলো, আয়কে কীভাবে বুঝবো আর বুঝে শুনে ব্যয়টাই বা কীভাবে করবো? নিজের কষ্টে উপার্জিত অর্থ কীভাবে ম্যানেজ করলে সেরা ফলাফল পাওয়া যায়, সেটা নিয়ে একটা চমৎকার কনসেপ্ট হলো The Six Jar Method. নামটা শুনেই মনে হচ্ছে এখানে জার অর্থাৎ বয়াম নিয়ে কথা হবে। এখানে বয়াম বা জার শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে রূপক অর্থে। প্রতিটি জার বা বয়াম বলতে এখানে বোঝানো হয়েছে আমরা আমাদের উপার্জনকে মূলত কয় ভাগে ভাগ করবো সেটাকে। The Six Jar Method অনুযায়ী, আমরা আমাদের উপার্জনকে ৬ টি আলাদা অংশে ভাগ করবো। সোজা কথায় যেই ব্যক্তি আগে কখনও নিজের টাকা নিয়ে গুছিয়ে চিন্তা করেননি, সেই ব্যক্তির উচিত হবে নিজের উপার্জিত অর্থ ৬ ভাগে ভাগ করা। এবার আসা যাক ৬ টি ভাগ কী কী এবং কোন ভাগে আয়ের কত শতাংশ পড়বে! ১। প্রথম জার বা বয়ামে যাবে আমাদের উপার্জিত অর্থের ৫০% | আর এই অংশটি ব্যয় করা হবে মাসিক নিত্যনৈমিত্তিক খরচের জন্য। যেমনঃ বাসা ভাড়া, খাবার, যাতায়াতের খরচ ইত্যাদি। ২। দ্বিতীয় জারে রাখা হবে আমাদের আয়ের ১০%। আর এই অর্থটা ব্যয় করা হবে বিনোদনের জন্য। যেমনঃ পরিবারের সবাইকে নিয়ে কোথাও বেড়াতে যাওয়া, ট্রাভেল করা, সিনেমা দেখা ইত্যাদি। মানসিক শান্তি আর আনন্দেরও দরকার আছে। এত আয় উপার্জন করে হবে টা কী যদি আমরা মানসিকভাবে শান্তিতে না থাকি? ৩। এবার আসা যাক তৃতীয় জারে। এই জারে থাকবে আমাদের উপার্জনের ১০%। আর এই জারটির মূল উদ্দেশ্য হলো অর্থনৈতিক মুক্তি বা স্বাধীনতা লাভ। অর্থটা এমন খাতে ব্যয় করা হবে, যেটার কারণে এক সময় এত পরিমাণ অর্থ জমা হবে যে তখন আর অর্থের জন্য কাজ করতে হবে না। এক্ষেত্রে একাধিক আয়ের উৎস তৈরি করা যেতে পারে। কিংবা প্যাসিভ ইনকাম সোর্সও তৈরি করা যেতে পারে। প্যাসিভ ইনকাম সোর্স হচ্ছে এমন একটা সিস্টেম যেটা তৈরি করার পর, দিনের পর দিন কাজ না করলেও টাকা আসতে থাকবে। যেমনঃ ইউটিউবে একবার ভিডিও বানিয়ে আপলোড দিলে আপনি কাজ করেন আর না করেন, ওই ভিডিও থেকে যত মানুষ দিনের পর দিন দেখবে, আপনি আস্তে আস্তে তত ধনী হবেন। ৪। চতুর্থ জারটি দীর্ঘকালীন সঞ্চয়য়ের জন্য। এখানেও আপনার আয়ের ১০% রাখা হবে। আর সেগুলো ব্যয় করা হবে উচ্চশিক্ষার জন্য, বিয়ে করার জন্য কিংবা চিকিৎসার জন্য বেশি অর্থ লাগলে সেই খাতে। ৫। পঞ্চম জারটিকে বলা যেতে পারে আত্মউন্নয়ন জার। অর্থাৎ এই খাতে সঞ্চিত অর্থ ব্যয় করা হবে আত্মউন্নয়নের জন্য। এখানেও আপনার আয়ের উপার্জনের ১০% অর্থই রাখা হবে। অনেকেই ভাবতে পারেন, এই খাতে আলাদা করে অর্থ বিনিয়োগের কী আছে। উত্তর হলো, বেশির ভাগ মানুষ যেখানে ক্লাসের পড়াই ঠিক মত শেষ করে না, বই পড়ার অভ্যাস রাখে না, টাকা দিয়ে অভিজ্ঞ মানুষের কথা শুনতে সেমিনারে যায় না, ৩ মাসের ইন্টারনেট বিলের সমপরিমাণ খরচের সমান মূল্যের বই কিনে না; সেখানে আপনি একটু আত্মউন্নয়নে ব্যয় করলে সহজেই অনেকের চেয়ে এগিয়ে যাবেন। ৬। এবার আসা যাক ষষ্ঠ ও শেষ জারটিতে। এই জারটিতেও দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম জারের সমপরিমাণ ১০% অর্থই রাখা হবে। তবে এই অর্থটা নিজের জন্যে নয়, মানুষকে দিয়ে দেয়ার জন্য। মানুষকে দেয়ার সময় আমরা নিজের অবচেতন মনকে বলি, 'আমার যথেষ্ট আছে'। এই যথেষ্ট থাকার 'Abundant Mindset' আমাদেরকে কার্পণ্য আর সঙ্কীর্ণমনা চিন্তা থেকে বের করে আনে। তাহলে, সংক্ষেপে The Six Jar Method কে এভাবে বর্ণনা করা যায়, আমাদের উপার্জিত অর্থের ৫০ শতাংশ ব্যয় হবে আমাদ্দের নিত্যনৈমিত্তিক চাহিদা পূরণে, আর বাকি ৫০ শতাংশ ভাগ হবে সমান ৫ ভাগে যার প্রতিটি ভাগ ব্যয় করা হবে যথাক্রমে- বিনোদনে, অর্থনৈতিক মুক্তিলাভে, দীর্ঘকালীন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে, আত্মউন্নয়নে এবং দানের খাতে। এখন থেকে নিজের উপার্জনটাকে The Six Jar Method অনুযায়ী ভাগ করে যথাযথ উপায়ে ব্যয় করুন।