Topics

Quizzes

ফাইন্যান্স এর কঠিন বিষয় গুলি বুঝে নেই

Professional Finance

click click click click click





Company Return on Investment - Infographics



Company Return on Investment

ব্যবসা করতে গেলে প্রথমেই যে শব্দগুলো মাথায় চলে আসে তার মধ্যে একটি হচ্ছে বিনিয়োগ বা ইনভেস্টমেন্ট। বিভিন্ন সময় উৎপাদন বাড়াতে কিংবা ব্যবসাকে এক ধাপ এগিয়ে নিতে আমাদের বিভিন্ন ধরণের বিনিয়োগ বা ইনভেস্টমেন্টের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আর এই সিদ্ধান্ত নিতে গেলে যে বিষয়টি আমাদেরকে হিসাব করতেই হয় সেটি হচ্ছে রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট বা ROI. অর্থাৎ, আমি যে টাকাটা ইনভেস্ট করছি তা থেকে আমি কী পরিমাণ উপকার পাবো তা বিচার করেই আমি সিদ্ধান্ত নেবো, আমি আসলেই বিনিয়োগ করব কিনা। রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট বা ROI হিসেব করার বেশ কিছু পদ্ধতি রয়েছে। পদ্ধতি ১ঃ Payback Period ধরা যাক, আপনি একটি যন্ত্র কিনবেন যার দাম এক লাখ টাকা। এই যন্ত্র ব্যবহার করলে প্রতি বছরে আপনার আয় হবে বিশ হাজার টাকা। তাহলে খুব সহজেই আমরা হিসাব করে ফেলতে পারি যে, এই যন্ত্রের উপর আপনার বিনিয়োগ করা টাকাটা আপনি পাঁচ বছর পরে ফেরত পেয়ে যাবেন। এক্ষেত্রে Payback Period হচ্ছে পাঁচ বছর। অর্থাৎ, এই যন্ত্রটি পাঁচ বছরের বেশি যতদিন কাজ করবে তা থেকে প্রাপ্ত আয়ের পুরোটাই আপনার লাভ। এখন, প্রশ্ন হচ্ছে, এই যন্ত্র কতদিন কাজ করলে আপনি এতে বিনিয়োগ করবেন? স্বাভাবিক জ্ঞান থেকে বিচার করলেই বোঝা যাবে, এই যন্ত্র পাঁচ বছরের বেশি কাজ করলেই কেবল আপনার উচিত হবে বিনিয়োগ করা। অর্থাৎ, এই যন্ত্র যদি তিন বছর কাজ করে তাহলে আপনি আপনার বিনিয়োগের পুরোটাই ফিরে পাচ্ছেন না, লাভ তো দূরের কথা। তাহলে দেখা গেল, এই পদ্ধতিতে আপনাকে আসলে হিসেব করতে হবে ঠিক কতটা সময়ের মধ্যে আপনি আপনার বিনিয়োগ ফিরে পাচ্ছেন এবং তারপরই কেবল আপনি সিদ্ধান্ত নেবেন, আপনি বিনিয়োগ করবেন কিনা। এই পদ্ধতির একটু বড় সমস্যা হচ্ছে, টাকার মূল্য স্থির নয়। আজকে আপনার কাছে এক লাখ টাকার মূল্য যতটুকু, আগামী পাঁচ বছরে সেই মূল্য কমে। অর্থের ধর্মই এই, এর মান কমতে থাকে। অর্থাৎ মূদ্রাস্ফীতির কারণে আপনি পাঁচ বছর পরে এক লাখ টাকার সমান মূল্য পাবেন না। সেক্ষেত্রে চলে আসে দ্বিতীয় পদ্ধতি। পদ্ধতি ২ঃ Net Present Value মূদ্রাস্ফীতির কারণে পাঁচ বছর পরে যদি আপনার এক লাখ টাকার মূল্য কমে দাঁড়ায় বর্তমান সময়ের পঁচাশি হাজারের সমমানে, তাহলে দেখতেই পাচ্ছেন, আপনি আপনার বিনিয়োগের পরিমাণটা পাঁচ বছরেও ফিরে পাচ্ছেন না। সেক্ষেত্রে আপনার ছয় বছর সময় লাগছে শুধু আপনার ইনভেস্ট করা পরিমাণটা ফিরে পেতেই। অর্থাৎ এবার যখন আপনি আপনার পেব্যাক টাইম হিসেব করবেন, আপনাকে দেখতে হবে আপনার যন্ত্রটি আসলে ছয় বছর বা তার বেশি সার্ভিস দিতে পারবে কিনা। অর্থাৎ, নেট প্রেজেন্ট ভ্যালু হিসাব করলে আপনি ডিস্কাউন্ট রেট হিসেব করছেন বলে আপনি বুঝতে পারছেন আপনি আজকে যে টাকাটা ইনভেস্ট করছেন সেটি আপনি আসলে কতদিনে ফিরে পাবেন। পদ্ধতি ৩ঃ Internal Rate of Return এই পদ্ধতিতে আমাদেরকে একটি প্রজেক্টের পটেনশিয়াল হিসেব করতে হবে। ধরুন, আপনি নিজের কোম্পানিতে এক্স প্রজেক্ট রান করছেন যেখান থেকে আপনি ৫% লাভ করতে পারবেন বলে এস্টিমেট করছেন। এখন আপনাকে যদি এক্স বাদে অন্য কোন প্রজেক্টে ইনভেস্ট করতে হয়, তবে আগে নিশ্চিত হতে হবে সেই নতুন প্রজেক্টের লাভের এস্টিমেট অবশ্যই ৫% এর বেশি হবে। অর্থাৎ আপনি এক্স ছেড়ে ওয়াই বা জেড প্রজেক্টে তখনই বিনিয়োগ করবেন যখন পটেনশিয়ালি ওয়াই বা জেড প্রজেক্ট এক্স প্রজেক্টের চেয়ে বেশি লাভজনক হবে। পদ্ধতি ৪ঃ Break Even Analysis এই পদ্ধতিটি সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত। এই পদ্ধতিতে আপনি হিসাব করেন, কত ইউনিট পণ্য বিক্রি করলে আপনার ইনভেস্টমেন্ট বা বিনিয়োগকৃত অর্থ ফিরে পাওয়া সম্ভব। এক লাখ টাকায় যন্ত্রাংশ কেনার উদাহরণটিতে ফিরে যাই। ধরুন, আপনি প্রতিটি পণ্য এক হাজার টাকায় বিক্রি করছেন। তাহলে ছোট্ট একটু হিসেব করে ফেললে বলা যাচ্ছে, এই বিনিয়োগ তুলে ফেলতে আপনাকে একশোটি পণ্য বিক্রি করতে হবে। অর্থাৎ ব্রেক ইভেন অ্যানালাইসিস করে আমরা আমাদের বিনিয়োগের অর্থ ফিরে পেতে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা দাঁড় করাতে পারি। এই লক্ষমাত্রার সাথে সাথে আপনি আবার চাইলে সময়ও বেঁধে দিতে পারেন। অর্থাৎ, কোন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আপনি এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে চান তাও ব্রেক ইভেন অ্যানালাইসিসে যোগ করা সম্ভব। তো উপরের এই চারটি পদ্ধতি অবলম্বন করে আমরা সচরাচর হিসেব করে থাকি যে কোন একট বিশেষ ক্ষেত্রে আমাদের ইনভেস্ট করা উচিত হবে কিনা। বিনিয়োগ করার আগে তাই একটু কষ্ট করে এই পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করে রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট হিসেব করে নিলে ব্যবসায় ক্ষতির ঝুঁকি অনেকাংশেই কমানো সম্ভব।