অর্থই সকল অনর্থের মূল! সেই ছোট্টবেলা থেকে এই ভাবসম্প্রসারণ পড়ে পড়ে মুখে ফেনা তুলে ফেলেছি আমরা। কিন্তু কথাটুকুর সঙ্গে আদতে আমরা কতখানি একমত? বাংলা সিনেমা থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান অনুযায়ী সিনেমার নায়কের চিরন্তন ভাবে দারিদ্রতার স্বীকার। অন্যদিকে খলনায়কেরা অনেক টাকার মালিক। সেই জ্ঞানের সূত্র ধরেই আমরা অনেকে বিশ্বাসও করতে শুরু করেছি যাবতীয় ভালো মানুষের আসলে টাকা পয়সা তেমন একটা নাই। অন্যদিকে যাদের টাকা পয়সা আছে তারা খারাপ লোক। আসলেই কি তাই? আমাদের সমাজে যারা কমবয়সে বেশি অর্থ উপার্জন করে ফেলেছে তাদের দিকে সন্দেহের দিকে তাকানো হয়। টাকা যে সৎপথেও অর্জন করা যায় এই ব্যাপারটা মানতেই নারাজ আমরা। ধরা যাক, ২৩-২৫ বছর বয়সী কেউ একটা ব্যবসা কিংবা কাজের মাধ্যমে উপার্জন করা শুরু করেছেন। তখনই তাকে নিয়ে কানাঘুঁষা শুরু হবে এই বলে যে এই বয়সেই টাকা চিনে গেছে। আবার কেউ যদি তার কাজের মাধ্যমে অনেকের কর্মসংস্থানের বন্দোবস্ত করে তাহলে সে অবশ্যই বাহবা পাবে। আবার যে মুহূর্তে মানুষ জানবে যে এই কর্মসংস্থানের বন্দোবস্ত করার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অর্থ উপার্জন করছেন তখনই বাঁধে গণ্ডগোল। আচ্ছা, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে যুবসমাজের এগিয়ে আসাটা অনেক বেশি জরুরি। Sustainability বলে একটি শব্দ আছে যেটার শাব্দিক অর্থ স্থায়িত্ব। এখনকার তরুণ উদ্যোক্তাদের নেওয়া উদ্যোগগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে অর্থাৎ উদ্যোগগুলোর স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে সেখান থেকে অর্থ উপার্জন করাটা আবশ্যক। নতুবা সেটার পেছনে শ্রম দেওয়া মানুষগুলোর পারিশ্রমিক দেওয়া হবে কীভাবে। অর্থাৎ যেকোনো ভালো উদ্যোগকে প্রাণ দিতে অর্থের গুরুত্ব অনেক। সুতরাং, জীবনে হিরো হতে গেলে তোমাকে যেমন গরীব হতে হবে না তেমনি অর্থও সকল অনর্থের মূল না।