ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগের ঝুঁকি বা রিস্ক কী?
বন্ডে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একজন বিনিয়োগকারী মূলত দুই ধরনের ঝুঁকির সম্মুখহীন হয়ে থাকেন। একটি হচ্ছে ক্রেডিট রিস্ক এবং আরেকটি হলো ইন্টারেস্ট রেট রিস্ক বা সুদের হারের ঝুঁকি ।
ক্রেডিট রিস্ক বলতে আমরা বুঝি যে একজন বন্ডের ক্রেতা তার ক্রয়কৃত বন্ডের সুদ্ এবং আসল অর্থ প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সঠিক সময়ে পেতে ব্যর্থ হয়। আর ইন্টারেস্ট রেট রিস্ক বা সুদের হারের ঝুঁকি বলতে বুঝানো হয় যে বাজারের সুদের হারের পরিবর্তনের সাথে একটি বন্ডের মূল্য প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা।
বাংলাদেশ সরকার যখন বাংলাদেশী মুদ্রা (টাকায়) ট্রেজারী বন্ড ইস্যু করে, তখন ক্রেডিট রিস্ক থাকে না কারণ সরকারের টাকার প্রয়োজন হলে বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারের পক্ষে যেকোনো সময় টাকা ছাপাতে পারে।
ট্রেজারী বন্ডে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একজন বিনিয়োগকারী সুদের হারের ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারেন। সাধারণত বন্ডের সুদের হারের সাথে বন্ডের বাজারমূল্যের একটি বিপরীত সম্পর্ক রয়েছে। অর্থাৎ বাজারের সুদের হার যদি বেড়ে যায় তাহলে বন্ডের বাজারমূল্য কমে যাবে এবং সেক্ষেত্রে একজন বিনিয়োগকারী মূলধনী ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। ঠিক একইভাবে যদি বাজারের সুদের হার কমে যায় তাহলে একজন বিনিয়োগকারী সেখান থেকে মূলধনী লাভ করতে পারবেন। আমরা দুইটি উদাহরণের সাহায্যে জিনিসটি বুঝার চেষ্টা করি।
উদাহরণ -১: যখন সুদের হার বৃদ্ধি পায়
ধরুন আপনি একটি ৩ বছর মেয়াদি বন্ডে এক লক্ষ টাকা বিনিয়োয়োগ করেছেন যেখানে আপনাকে প্রতি বছর ৮% অথবা ৮ হাজার টাকা কুপন দেয়া হবে। ধরুন এক বছর পরে বাজার সুদের হার বেড়ে ১০% হয়ে গেছে, তার মানে কেউ এক লক্ষ টাকা এখন বিনিয়োগ করলে এক বছর পর সে এক লক্ষ ১০ হাজার টাকা ফেরত পাবেন।
এই মুহূর্তে আপনি যদি আপনার বন্ডটি বাজারে বিক্রি করতে যান তাহলে কেউ এক লক্ষ টাকায় ৮% কুপন রেটে বন্ডটি কিনবে না কারণ বাজারে ১০% কুপন রেট এর বন্ড পাওয়া যাচ্ছে। এমন অবস্থায় যদি আপনি আপনার বন্ডটি বিক্রয় করতে চান তাহলে অবশ্যই এর মূল্য এক লক্ষ থেকে কম হতে হবে (মনেকরি ৯৮,০০০ টাকা) যাতে বিনিয়োগ এর রিটার্ন ১০% এর আশে পাশে হবে যা কিনা বাজারের সুদের হারের সমান হবে। এভাবে বাজারে সুদের হার বৃদ্ধি পেলে বন্ডের মূল্য কমে যায়।
উদাহরণ -২: যখন সুদের হার হ্রাস পায়
এখন আমরা একটি বিপরীত উদাহরণ দেখি যেখানে বাজারের সুদের হার হ্রাস পায়। ধরুন আপনি একটি ৩ বছর মেয়াদি বন্ডে এক লক্ষ টাকা বিনিয়োয়োগ করেছেন যেখানে আপনাকে প্রতি বছর ৮% অথবা ৮ হাজার টাকা কুপন দেয়া হবে। ধরুন এক বছর পরে বাজার সুদের হার কমে ৬% হয়ে গেছে, তার মানে কেউ এক লক্ষ টাকা এখন বিনিয়োগ করলে এক বছর পর সে এক লক্ষ ৬ হাজার টাকা ফেরত পাবেন।
যেহেতু বাজারের ৬ হাজার টাকা কুপনের বন্ডগুলো এক লক্ষ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, স্বাভাবিকভাবে আপনি আপনার ৮ হাজার টাকা কুপনের বন্ডটি এক লক্ষের বেশি মূল্যে বিক্রি করতে চাইবেন এবং অন্য বিনিয়োগকারীরাও এই বন্ডের জন্য বেশি মূল্য বিড করবেন। তখন আপনার বন্ডের মূল্য এক লক্ষ্য থেকে